Pages

রবিবার, ২১ জুন, ২০১৫

পেশা হিসেবে মডেলিং

সাম্প্রতিককালে আমাদের দেশে মডেলিংয়ের ব্যাপ্তি ঘটেছে ব্যাপকহারে। বিশ্বায়নের প্রভাবে মডেলিংয়ের ব্যাপ্তি সৃষ্টি করেছে সম্ভাবনার উজ্জল ক্ষেত্র। ফলে শখকে অতিক্রম করে মডেলিং এখন পেশা হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে। তবে মডেলিংকে পেশা হিসেবে নেবার আগে এ সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ জানা-শোনার অভাবেই অনেক প্রতিভা থাকা সত্বেও মডেলিং ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকতে অনেকেই ব্যর্থ হন।

প্রথমেই জানাটা খুবই জরুরী যে আমাদের দেশে মডেলিং ইন্ডাস্ট্রি কিভাবে ক্ষেত্র প্রসারিত করছে। একজন সফল মডেলকে এটিও জ্ঞাতার্থে রাখা উচিত যে, মডেলিংয়ের কোন শাখায় তিনি বিচরণ করতে চান। 

আমাদের দেশের মডেলিং ইন্ডাস্ট্রিকে সাধারণ মূল তিনটি ধরণে বিভক্ত করা যেতে পারে। টিভি মিডিয়ায় বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেলিং, ফ্যাশন হাউসের জন্য মডেলিং ও র‌্যাম্প মডেলিং। এই তিনটি ধরণকে এক করে দেখলেও ক্ষতি নেই। কারণ এই ৩টি ক্ষেত্রেই বিচরণ করেছেন এমন মডেলের সংখ্যাও নগন্য নয়। 


বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেলিং 

বিশ্বজুড়েই পণ্যের প্রচারের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হচ্ছে বিজ্ঞাপনচিত্র। একটি পণ্য কত সহজ ও সফল উপায়ে ভোক্তার কাছে পৌঁছানো যায়, তা নিয়েই এখন চলছে জোর প্রতিযোগিতা। ফলে নতুন নতুন ধারণা ও কাঠামোর সংযোজন ঘটছে এ মাধ্যমটিতে। তবে ধারণা বা কাঠামোতে যতই সৃজনশীলতার খোরাক থাকুক না কেন, আসল কথা হলো সৃজনশীল মোড়কে একটি পণ্যকে নির্দিষ্ট ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেয়া। বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট পণ্য বেছে নেয়ার ক্ষেত্রে মার্কেটিং-এর বিভিন্ন থিওরির সঠিক বাস্তবায়ন করতে পারার মধ্যেই ঐ বিজ্ঞাপনটির সাফল্য নিহিত। বিজ্ঞাপনের কার্যকারিতার কয়েকটি ধাপ রয়েছে। প্রথম ধাপে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট পণ্যের প্রতি আকর্ষণ তৈরি করা হয়। দ্বিতীয় ধাপে পণ্যের প্রতি ক্রেতার এক ধরনের আগ্রহ সৃষ্টি করা হয়। তৃতীয় ধাপে ঐ পণ্যটি কেনার প্রতি আকাঙ্খা পোষণ করেন ক্রেতা। আর চতুর্থ ও শেষ ধাপে পণ্যটি ক্রয় করেন। অর্থাৎ মনোযোগ, আকর্ষণ, আকাঙ্খা- এ বিষয়গুলোই প্রাধান্য পায় একটি বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে। বিজ্ঞাপনের এ তত্ত্বটিকে ভোক্তাদের কাছে সহজে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার গুরুদায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেন একজন মডেল। বিজ্ঞাপনের গভীর অর্থটি নিজের ভেতর ধারণ করে অভিব্যক্তির মাধ্যমে পণ্যটি তুলে ধরাই একজন মডেলের মূল লক্ষ্য। আর এ কাজটি যিনি অল্প সময়ের মধ্যে সাবলীলভাবে করতে পারেন এবং নিজের উজ্জ্বল উপস্থিতির মাধ্যমে দর্শকদের মুগ্ধ করতে সক্ষম হন, তিনিই হয়ে ওঠেন তারকা। 

একটা সময় ছিল যখন বিজ্ঞাপনচিত্রের জন্য মডেল বলে কেউ ছিলেন না। যারা অভিনয়শিল্পী হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তাদেরই কেউ কেউ বিজ্ঞাপনচিত্রে অংশ নিতেন। পরবর্তী সময়ে ৯০’র দশকের শেষ থেকে শুধু মডেলিং-এর খাতায় নাম লেখান মৌ, নোবেল, মৌসুমী, তানিয়া, সুইটি, মনির খান শিমুল, পল্লব, ফয়সাল, জয়া আহসান, রোমানা প্রমুখ। পরবর্তীতে এ ধারাবাহিকতাতেই মোনালিসা, তিশা, তিন্নি, চঞ্চল চৌধুরী, অপূর্ব, নাদিয়া নিজেদের সফল অবস্থান গড়ে তোলেন। আর বর্তমানের বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেলদের মধ্যে রয়েছেন নিরব, প্রভা, ইমন, সারিকা, শখ, নিশো, ববি, ইমি, শোয়েব, চৈতী, সীমানা, নোভা প্রমুখ। 

আজ থেকে তিন-চার বছর আগেও আমাদের দেশে সাধারণত জিঙ্গেলনির্ভর বিজ্ঞাপনচিত্র নির্মিত হতো। বিগত কয়েক বছর ধরে থিমনির্ভর বিজ্ঞাপনচিত্র নির্মিত হচ্ছে। এ কারণে বিগত কয়েক বছরে মোবাইল কোম্পানিগুলোর থিমনির্ভর বিজ্ঞাপনচিত্রগুলো একদিকে যেমন দর্শকদের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টি করতে পেরেছে, তেমনি এসব বিজ্ঞাপনচিত্রে পারফর্ম করে রাতারাতি তারকাও হয়েছেন অনেকে। উদাহরণস্বরূপ, সাম্প্রতিক সময়ে রবির নতুন একটি বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজের মাধ্যমে আলোচিত হয়েছেন সঙ্গীতশিল্পী মিথিলা। এছাড়া গ্রামীণফোনের নতুন বিজ্ঞাপনচিত্র ‘রঙ্গিলা রে’ তে কাজ করে রাতারাতি তারকা বনে গেছেন নবাগত বীথি সরকার। 


ফ্যাশন হাউসের জন্য মডেলিং 

বর্তমানে ফ্যাশন হাউজের জন্য বছরের বিভিন্ন উৎসব-পার্বনে প্রচুর মডেল প্রয়োজন হয়। ঈদ, পূজা, নববর্ষ ও বিভিন্ন দিবসের পোশাকের প্রদর্শনীর জন্য মডেলদের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশী। প্রসিদ্ধ ফ্যাশন হাউজগুলো প্রমিন্যান্ট মডেলদের দিয়ে পোশাকের প্রদর্শনীর ফটো তুললেও অনেক নতুন ফ্যাশন হাউজদেরকেই নির্ভর করতে হয় নতুন মডেলদের উপর। এর কারণ হিসেবে বলা যায়, প্রমিন্যান্ট মডেলরা যে কোন হাউজের ফটোসেশনে বেশ মোটা অংকের অর্থ দাবি করেন যেটি নতুন ফ্যাশন হাউজগুলোর জন্য অনেক সময় বাজেটের অধিক হয়ে দাঁড়ায়। অপরদিকে নতুন মডেলরা প্রচারের তাগিদে এক্ষেত্রে অনেক কম অর্থের বিনিময়েই এসব নতুন ফ্যাশন হাউজের ফটোসেশন করে থাকেন। এজন্য সামগ্রিকভাবে বলা যায়, নতুন মডেলদের ক্ষেত্র হিসেবে ফ্যাশন হাউসের জন্য মডেলিং নতুন দিগন্ত হিসেবে উঠে এসেছে। 


র‌্যাম্প মডেলিং 

র‌্যাম্প ওয়ার্ল্ড তরুণ-তরুণীদের কাছে আকর্ষণীয় এক জগতের নাম। তবে এ জগতে নাম লেখাতে হলে একজন মডেলকে কিছু যোগ্যতার অধিকারী হতে হয়। এক্ষেত্রে প্রথমেই আসবে উচ্চতার প্রসঙ্গটি। পৃথিবীব্যপী র‌্যাম্প মডেলিংয়ের জন্য আদর্শ উচ্চতা ধরা হয় ছেলেদের ক্ষেত্রে ৬ ফুট এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি। তবে আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে ছেলেদের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি উচ্চতা থাকাটা জরুরী। উপরন্তু শারীরিক ফিটনেসও র‌্যাম্পে কাজ করার জন্য জরুরী। এরপরই আসবে গ্রুপে রিহার্সেলের বিষয়টি। র‌্যাম্প মডেলিং একক কোন বিষয় নয়। বরং একটি গ্রুপের মাঝে থেকে নিজেকে সতন্ত্র উপস্থাপনার মাঝেই একজন র‌্যাম্প মডেল পরিচিতি পান। এজন্য নিয়মিত রিহার্সেলের কোন বিকল্প নেই। ইদানিংকালে রাজধানীর কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান র‌্যাম্প মডেলদের গ্রুমিং করিয়ে থাকেন। নিজের শারীরিক উচ্চতা ও ফিটনেস যদি ঠিক থাকে তবে এসব প্রতিণ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে র‌্যাম্প মডেল হিসেবে নিজের অবস্থানকে পোক্ত করা সম্ভবপর হবে। ২০০৮ সালের বলিউডের ব্লকবাস্টার হিট ‘ফ্যাশন’ ছবিতেও র‌্যাম্প ওয়ার্ল্ড সম্পর্কে অনেক অজানা বিষয় জানা যায়। 


মডেলিং সম্পর্কে বিজ্ঞাপন নির্মাতারা যা বললেন- 

অমিতাভ রেজা : এখন তরুণদের মধ্যে মডেলিং-এর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি। প্রথম কারণ হচ্ছে, এ মাধ্যমে কাজ করার ফলে আর্থিকভাবে লাভ
  • 0Blogger Comment
  • Facebook Comment

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন